দুঃখজনক প্রেমের গল্প কার ভুলঃ আমি প্রেমে প্রতারিত হয়েছি।

 শাকিয়া কলেজ ছেড়েছিল এবং একদিন সে কিছু জিনিস কিনতে একটি সপিং মলে গিয়েছিল। কলেজের পুরানো বন্ধু আশিকের সাথে দেখা হলে আশিক শাকিয়াকে বলল ওহ হ্যালো শাকিয়া । 



কেমন আছো, কলেজ ছাড়ার পর আমরা বন্ধুরা সবাই একে অপরকে মনেহ হয় ভুলে গেছি। সে গেল, শাকিয়া একটু লাজুক স্বরে বলল না আশিক, আসলে আমি কাউকে ভুলিনি, একটাই কথা সময় পাই না।

তারপর আশিক তার দিকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকাতে লাগলো এবং শাকিয়াকে দেখে মনে মনে ভাবছিল যে বাহ শাকিয়া কত সুন্দর হয়েছে । তার কাছ থেকে আমাকে মোবাইল নম্বর নিতে হবে । 

যদিও শাকিয়া প্রথম থেকেই খুব সাদাসিধা মেয়ে ছিল এবং সে আশিক সম্পর্কে সঠিক ভাবে জনতোনা । কলেজের সময় থেকেই আশিক খুব প্রতারক ছেলে ছিল, কিন্তু শাকিয়া এসব কিছুই জানত না।

তারপর আশিক শাকিয়াকে বলল যে শাকিয়া চলো এক কাপ কফি খাই, তখন শাকিয়া প্রত্যাখ্যান করল কিন্তু আশিক বলল যে মানুষ এর সাথে অনেক দিন পর দেখা হলো, আমি জানি না শাকিয়া আমাদের  আবার কবে দেখা হবে, তখন আশিক তার হাত ধরে কফি খাওয়ার জন্য নিয়ে গেল এবং শাকিয়া যেতে অস্বীকার করতে পারল না।  তারপর দুজনেই এক সাথে কফি পান শেষ করে শাকিয়া চলে যেতে লাগল।

কিন্তু আশিক খুব চালাকি করে শাকিয়ার কাছে তার মোবাইল নাম্বার চাইলো এবং  শাকিয়া আশিককে তার মোবাইল নাম্বার দিল না, তখন শাকিয়া বললো যে আশিক, এখন আমি যাই, আমার হয়তো অনেক দেরি হয়ে গেছে, সবাই বাসায় আমার জন্য অপেক্ষা করছে।

তাই আশিক আবার শাকিরার হাত ধরে বলল, প্লিজ কিছুক্ষন অপেক্ষা কর শাকিয়া আমরা এত দিন পর দেখা হয়েছে আর তুমি মাত্র  পাচ মিনিট অপেক্ষা কর, শুধু তুমি বল তোমার কোন বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি? এখনো তুমি এভাবে লাজুক চেহারায় আছো শাকিয়া কিছু বলো । শাকিয়া আশিককে বলল যে না আশিক আমার কোন বয়ফ্রেন্ড নেই। 

তারপর আশিক সুযোগ বুঝে  তাকে বলল, আরে শাকিয়া তুমি তো দেখতে অনেক সুন্দর তারপরেও তোমাকে কেউ প্রেমের প্রস্তাব দেইনি কি আশ্চার্চ এখনো তোমার বয়ফ্রেন্ট নাই।আমার তো বিশ্বাসি হচ্ছেনা । 

শাকিয়া একটু দুঃখ পেল এই সুযোগে আশিক শাকিয়ার কাঁধে হাত রেখে বললো তুমি চিন্তা করোনা শাকিয়া শীঘ্রই তোমার জীবনে সুন্দর একজন বয়ফ্রেন্ড আসবে ।

যে তোমার জীবনে আসবে সে তোমাকে খুব ভালোবাসবে ।এদিকে আশিক কথার মাঝে শাকিয়ার হাতের উপর হাত রাখলো এবং শাকিয়ার মনের ভিতরে কিছুটা প্রেমের ছোয়া নাড়া দিল।কিন্তু শাকিয়া হয়তো আশিকের চোখে তার প্রতারণা দেখতে পায়নি এবং আশিকের হাতটিও তার হাতের উপর থেকে সরাতে পারিনি ।

তারপর আশিক শাকিয়াকে তার সাথে সেলফি তুলতে বললো কিন্তু কেন জানি শাকিয়া আশিক কে সেলফি তুলতে বাধা দিতে পারিনি।

মনে হয় আশিক তার সরল সরলতা মনটি কেড়ে নিয়েছে। শাকিয়া ভয়ে ভয়ে  আশিকের হোয়াটসঅ্যাপে কখন কি পাঠাচ্ছে, কখনো তাকে গোলাপ পাঠাচ্ছে, কখনো তাকে হার্ট বা চুমুর মেসেজ পাঠাচ্ছে।আশিক ভাবলো মনে হয় শাকিয়া কোথাও ভয় বোধ করছে ।

আশিক তাকে বললো আরে মানুষ হয়ে এত ভয় করে তুমি কি জান কত বন্ধু বান্ধবী বাগানে ঘুরতে যায় এবং এক সাথে এক জায়গায় বসে গল্প করে চুমু খায় অথচ পরিবারের সদস্যরা তাদের সম্পর্কে কিছুই জানেনা ।

এতে শাকিরার খুব উৎসাহিত হয়।একদিন শাকিরার বাড়িতে কেউ ছিল না । যখন আশিক এই কথা জানতে পারে, তখন হঠাৎ করে সে শাকিয়ার বাড়িতে আসে।আশিক শাকিরার ঘরে বসে তার হাত ছুঁতে থাকে।আর শাকিরা তাকে মানে আশিক কে থামাতে চাইলে আশিক তাকে বলে আমি তোমাকে ভালোবাসি।

এখন শাকিয়া তাকে থামাতে পারছেনা কারন এই প্রথমবার কেউ তাকে আই লাভ ইউ বলছে ।কিন্তু সে মুহুর্তে আশিকের ভেতরের খারাপ কিছু দেখতে পায়নি।শাকিরা আশিক কে জিজ্ঞেস করল এখন তুমি যাও কিন্তু আশিক তার কাছে একটা চুমু পাওয়ার আশা করে এবং সে তাকে অনেক চুমু খেয়েছিল।আর চুমু খেতে খেতে সে তার সাথে একটা সেলফিও তুলল। তারপর সেখান থেকে চলে গেল। 

এখন শাকিয়া খুব ভয় পেল কিন্তু সে আশিকের কথা তার পরিবারের সদস্যদের কাছে কিছু জানায়নি। এখন সারাদিন আশিক শাকিয়ার কাছে মোবাই ফোন করে। এভাবে দিনের পর দিন তারা ফোনে কথা বলতেই থাকে ।একবার আশিক শাকিয়াকে একটা হোটেলে আসতে বলল।


কিন্তু শাকিয়া তাকে বলল যে আশিক তুমি আমাকে বিয়ে করো ।তারপর তুমি আমাকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চাও আমি সেখানেই যাবো।কিন্তু আশিক জোর দিয়ে বললো না শাকিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তুমি বিশ্বাস কর আমি তোমাকে একদিন বিয়েও করবো।তাহলে আমার সাথে চলাফেরা করতে তোমার ক্ষতি কি?

আশিক বলল ,শাকিয়া প্লিজ একবার মাত্র হোটেলে আসো।শাকিয়া বলল আশিক বিয়ের আগে এই সব কারা ভুল হবে ।

তারপর আশিক বার বার ফোনে অনুরুধ করতে লাগলো এবং বলল শাকিয়া একবার তুমি হোটেলে এসে আমার সাথে দেখা করো ।আর আমার সাথে দশ টা মিনিট কথা বলে চলে যেও।এবার শাকিয়া তার কথায় মায়ায় পড়ে গেল এবং সে হোটেলে চলে গেল।রুমের ভিতরে আসার জন্য শাকিয়াকে অনুরুধ করলো আশিক ।

এদিকে শাকিয়া পরিবারের কাউকে কিছু না বলে সে আশিকের ডাকে সাড়া দিতে হোটেল রুমে যায়।শাকিয়া রুমে ঢুকার সাথে সাথে আশিক তাকে মাদক মেশানো ঠান্ডা পানি পান করতে দেয়।শাকিয়া সে পানি পান করে ধীরে ধীরে নেশা গ্রস্ত হতে শুরু করে। ঠিক সে সময় হঠাৎ আশিকের এক বন্ধুও সেখানে হাজির ।

শাকিয়ার সামনে তারা দুই বন্ধু হাসা হাসি করছিল। তখন শাকিয়া বুঝতে পারলো যে আশিক তার সাথে প্রতারনা করেছে ।তারপরে আশিক এবং তার বন্ধু মিলে শাকিয়ার সাথে নোংরা কাজ করে ।

বন্ধুরা, আমি আপনাদের কে আর গল্প বলতে পারব না, কারণ এটি কারও মেয়ে বা বোনের সম্মানের প্রশ্ন।

কিন্তু আমি আপনাকে এই গল্পটি বলেছি কারণ কেন আমার বোনেরা শাকিরার মতো বারবার একই ভুল করি। আমি তাদের সত্যিকারের ভালবাসা থেকে বাধা দিচ্ছি না।আমি কেবল তাদের সেই কুরুচিপূর্ন মানুষের জালে আটকা পড়া থেকে বিরত রাখতে চাই্।জানিনা কত বার শাকিরার মত মেয়েদের জীবনকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দিয়েছে তাদের শিকার বানিয়ে।

তাই আমার প্রিয় বোনদের ভালবাসুন তবে সত্য এবং হ্যাঁ, যদি কোনও লোক আপনাকে বিয়ের আগে হোটেলে বা কোনও অজানা জায়গায় দেখা করতে বলে।  তবে বুঝুন আপনার খ্যাতি এবং আপনার জীবন খুব "বিপদে" হতে পারে এবং আপনি যদি আপনার প্রেমিককেও পূর্ণ বিশ্বাস  করে যান। তারপরও অনুগ্রহ করে আপনার পরিবারের সদস্য বা কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পরামর্শ নিন যাতে আপনার জীবন সবসময় নিরাপদ থাকে….ধন্যবাদ!

আপনার এই গল্পটি কেমন লাগলো এবং নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানান। আপনি যদি এই গল্পটি পছন্দ করেন তবে অবশ্যই এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url