সাবধান মা বোন ও ভাইয়েরা ৪ সময়ে সহবাস করলে জাহান্নামী হবেন ।

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন আশা করি আপনারা ভালো আছেন আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। 

বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলাম এর বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। যা আমাদের প্রত্যেক মোসলমানদের জানা অতিবো জরুরি। আমি আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন যে কোন কাজ করলে সহবাসের কারণেও আপনার জাহান্নাম হতে পারে। তাহলে আসুন বন্ধুরা আমরা এই বিষয়ে একটু মনোযোগ সহগাড়ে পড়ে ভালো ভাবে বিষয়টি বুঝিয়ে নেই এবং যাতে জাহান্নামের ভয়ংকর আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সেই বিষয় গুলো পরিত্যাগ করে আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে উৎসরর্গ করি।

আজ আমি আপনাদের কাছে আলোচনা করবো কোন ৪ টি সময়ে সহবাস করলে আল্লাহ তায়ালা সে ব্যাক্তির উপর অত্যন্ত নারাজ হয় এবং সে ব্যাক্তির উপর আল্লাহর গজব নাজিল হওয়া অবধারিত হয়ে যায়।

এই কারণে তাকে পরকালে জাহান্নামি হতে হবে। তাই আজকের এই পোস্টের প্রত্যেকটি কথা খুব মনোযোগ ভাবে পড়বেন এবং বুঝতে চেষ্টা করবেন।

হয়তো আল্লাহ তায়ালা চেয়েছেন বলেই আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ছেন। তাই পোস্টটি নিজে পড়ে সেই ভাবে চলার চেষ্টা করবেন এবং এই পোস্টটি শেয়ার করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। 

এক নাম্বারঃ বিবহের পূর্বে সহবাস করলে। 

সাবধান মা বোন ও ভাইয়েরা ৪ সময়ে সহবাস করলে জাহান্নামী হবেন ।
অনেক সময় আমাদের কিছু মানুষের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে যে যেহেতু আমাদের পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তাই আমাদের এখন সহবাস করতে দোষ কোথায়? 

সাবধান! যদি এমনটা ভেবে থাকেন বা করে থাকেন, তাহলে আজকেই আল্লাহর কাছে তওবা করুণ। 

কারণ আপনার বিয়ে যতই ঠিক হয়ে থাকুক না কেন! বিয়ের একদিন বা এক মুহূর্ত আগেও আপনি যদি সেই পাত্রীর সাথে বা পছন্দের প্রেমিকার সাথে সহবাস করে থাকেন তাহলে আপনি একজন যেনাকারি তথা ব্যভিচারী হিসেবে সাব্যস্ত হবেন।

আর আল্লাহর তায়ালা পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে ভাবে বলেনঃ

আর "তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেওনা। নিশ্চয় তা অশ্লীলতা ও বিপদগামিতা" (সূরা বনী ইসরাইল ১৭ ও ৩২)

এ বিষয়ে হাদিস বর্ণনা আছে যে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা তিনি রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছেনঃ আল্লাহর কাছে সব চাইতে বড় গুনাহ কি?

রাসূল (সাঃ) বললেনঃ সব চাইতে বড় গুনাহ হলো আল্লাহর সাথে কাউকে শিরক করা। তারপর দ্বিতীয় বড় গুনাহ হলো কাউকে হত্যা করা এবং পিতা মাতার সাথে খারাপ ব্যবহার করা এবং তৃতীয় বড় গুনাহ হলো পরকীয়া, ধর্ষন ও জেনা ব্যভিচার করা।

(বুখারীঃ ৫৪৬২, ৫৫৬৬, ৬০০১; মুসলিমঃ ৮৬)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে যেন এই পাপাচার গুলো থেকে যেন দূরে রাখেন, আমিন। 

আমরা সমাজের একটা জিনিস লক্ষ্য করি অনেক পরিবারের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বা অল্প সামর্থ্যবান তাদের ছেলে মেয়েকে বিবাহর বয়স হলেও বিবাহ করায় না আবার দেখা যায় কোনো কোনো ব্যাক্তি ছেলে মেয়ের বিবাহ ঠিক করে মাসের পর মাস কাটিয়ে দেন। 

সে সমস্ত পরিবারের উদ্দেশ্য আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ "তোমরা বিবাহ যোগ্যদের বিবাহ সম্পুর্ন করাও, তারা অভাবগ্রস্থ হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছলতা দান করবেন ; আল্লাহ তো প্রাচুর্যময়,সর্বজ্ঞাত"। (সুরাঃ নুর ২৪, আয়াত ৩২)

আবার সামর্থ্যবান যুবকদের প্রতি রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ " হে যুবক সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে নেয়। কারণ বিয়ে দৃষ্টিকে অবনমিত করে এবং লজ্জাস্থান কে হেফাজত করে। আর যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না ; সে যেন সিয়াম বা রোজা পালন করে।কারণ রোজা যৌন প্রবৃত্তি নিবৃত্তি করে।" (বুখারীঃ ২৬৮৫; মুসলিমঃ ৩৪৬৬)

আরও আপনি পড়তে পারেনঃ

  1. পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং প্রিয়জনদের জন্য ২০২২ সালের সেরা ৩৫ টি ঈদ মোবারক শুভেচ্ছা।
  2. ঈদ উল ফিতর 2022, অর্থ, ইতিহাস, তাৎপর্য এবং ঘটনা।
  3. আজ পবিত্র রমজান মাসে ফিতরার দাম নির্ধারণ ও ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে সে বিষয়ে একটি সচেতনতা মূলক পোস্ট লিখলাম।

দ্বিতীয় নাম্বারঃ কোন নারী পুরুষ যখন রজান মাসে নিজেদের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সহবাসে লিপ্ত হয়।

তখন তার বা তাদের উপর আল্লাহর লানত বা গজব নাজিল হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ তোমরা রমজান মাসে দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাস করোনা এবং এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কালেও স্ত্রী সহবাস করো না । এটা হলো আল্লাহ্‌ কর্তৃক বেঁধে দেওয়া সীমানা । অতএব এর কাছেও যেওনা ।

(আয়াতঃ সুরা আল বাকারা আয়াত নং ১৮৭)

তবে রমজান মাসে দিনের বেলায় স্বামী স্ত্রী জন্য সহবাস ব্যতীত অর্থাৎ স্ত্রী যৌনিতে প্রবেশ ও বীর্যপাত ব্যতীত নিজের স্ত্রিকে উপভোগ করা জায়েজ আছে । যদি তাঁরা এত্তেকাফে না বসেন এবং নিজের যৌন নিয়ন্ত্রনে সক্ষম ব্যক্তি হয়ে থাকেন , তাহলেই কেবল স্ত্রীকে আলিঙ্গন চুম্বন কারা জায়েজ আছে।

কেন না হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসুল সাঃ রোজা রেখে স্ত্রীকে চুম্বন করতেন; স্ত্রীর সাথে মুবাশারা বা আলিঙ্গন করতেন ।এবং তিনি ছিলেন তাঁর যৌনাকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি । (বুখারি ও মুসলিম)

তিন নাম্বারঃ স্ত্রীর হায়েজ অবস্থায় বা মাসিক অবস্থায় সহবাস করলে ।

যদি কোন স্বামী স্ত্রীর হায়েজ অবস্থায় বা স্ত্রীর অসুস্থতা অবস্থায় যদি স্ত্রী সহবাস করে তা হলে তাঁর উপর আল্লাহর গোজব অবধারিত হয়ে যায় ।

কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ হে নবী লোকে যখন রাজঃস্রাব সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করে তখন আপনি বলে দিন তা অসুচি বা কষ্টদায়ক সময় । সুতরাং তোমরা রাজঃস্রাব কালে স্ত্রী সহবাস বর্জন করো এবং যতদিন না তারা পবিত্র হয়। অতঃপর যখন তাঁরা ফরজ গোসল করে পবিত্র হয় তখন তাঁদের নিকট ঠিক সেই ভাবে গমন কর ,যে ভাবে আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেছেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ ক্ষমাপ্রাথী গণকে এবং যারা পবিত্র থাকে ,তাদেরকে পছন্দ করেন ।

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হায়েজ অবস্থায় সহবাস করোনা , যে ব্যক্তি তা করবে সে আল্লাহ্‌ কাছে কোরআন অস্বীকারকারী হিসাবে সাব্যস্থ হবে।কারণ আল্লাহ্‌ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ তায়ালা তা সরাসরি নিষেধ করেছেন, সুতারাং কেউ এরূপ করলে তাঁর উপর আল্লাহ্‌ রহমত উঠে যায় তথা গজব নাজিল হয় ।

অনেক সময় অনেক স্বামী আছেন যারা হায়েজা নারীর সাথে কনডম দিয়ে সহবাস করতে চায়, তাঁদেরকেও বলছি এটা কখনোই করবেন না ।এতে একদিকে যেমন আল্লাহ্‌ নারাজ হবেন, অন্যদিকে আপনার স্ত্রীর যৌনাঙ্গে শারীরিক সমস্যা দেখা দিবে। তবে আপনি চাইলে আপনার স্ত্রীর যৌনাঙ্গে লিঙ্গ স্থাপন ব্যতীত অন্যন্য আনুষাংগীক সহবাস করতে পারেন ।যেমন চুম্বন,আলিজ্ঞন, মিশামিশি করতে পারেন।

হায়েজের সময় যদি আপনি কনডম দিয়েও সহবাস করে থাকেন , তাহলে স্ত্রীর পরিয়ডের ব্লাড গুলো জয়ায়ুর আশে পাশে বিভিন্ন অংশে জমাট বেঁধে যেতে পারে।এর কারণে পরবর্তীতে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।তাই এই কাজটি আপনারা কখনোই করবেন না । 

চতুর্থ নাম্বারঃ স্ত্রীর পায়ুপথে সহবাস করলে সে ব্যক্তির উপরও আল্লাহর গজব নাজিল হয়ে থাকে ।

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর পায়খানার রাস্তায় সহবাস করবে, আল্লাহ্‌ তাঁর দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) তাকান না । অর্থাৎ তাঁর থেকে আল্লাহ্‌ রহমত উঠিয়ে নেন, তাঁর জীবনে একটার পর একটা বিপদ আস্তেই থাকে, তাঁর ঘরে আয় রোজগার যতই হোক না কেনো তাঁর ঘরে কোনো বরকত থাকেনা সে কোনো বরকত পাবেনা। এবং তাঁর কোন দোয়া কবুল হবেনা।

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url