মানুষ মারা গেলে যে কাজ গুলি ভুলেও করবেন না

মানুষ মারা গেলে যে কাজ গুলি ভুলেও করবেন না

মানুষ হলো পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। আল্লাহ তায়ালা তার ইবাদত করার জন্য মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন।আল্লাহ তায়ালা মানুষ কে পৃথিবীতে পাঠানোর আগে তিনি কয়েকটি জিনিস হাতে রেখে দুনিয়াতে পাঠিয়ে দিয়েছেন মানুষ কে সে সব জিনিস হলোঃ

  1. কিয়ামত সম্পর্কে জ্ঞান। 
  2. তিনি কখন কিভাবে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।
  3. মায়ের গর্ভে কি আছে। 
  4. মানুষের রিজিক সম্পর্কে তিনি জানেন।
  5. মানুষের মৃত্যু কখন কি ভাবে হবে।
এই ৫ টি জিনিস আল্লাহ হাতে রেখে মানুষ কে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। আর এর মধ্যে একটি হলো মানুষের মৃত্যু। প্রত্যেক জীবকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আমরা জানিনা আমাদের মৃত্যু কখন কি ভাবে হবে তাই সব সময় আমাদের মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। 

আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো কিছু বিষয় নিয়ে যে গুলি মানুষের মৃত্যুর পর ভুলেও করা যাবে না।তো বন্ধুরা দেরি না করে চলুন মুল আলোচনা করা যাক।

মানুষ মারা গেলে আমাদের কিছু কাজ অবশ্যই বর্জন করতে হবে। 

১) একজন মানুষ যখন মারা গেলে  তখন তাকে যত তারাতাড়ি সম্ভব দাফন করতে হবে। কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া যেমন, কোন ব্যাক্তি এমন সময় মারা গিয়েছে যে তখন প্রচান্ডহারে বৃষ্টি হচ্ছে। এমন কি টানা ৭ থেকে ৮ ঘন্টা একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। এমন অবস্থা যে লাশ কে কোন ভাবেই গোরস্থান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এর মানে এই নয় যে,বাহিরে থেকে মৃত ব্যক্তির কোন আত্নীয় স্বজন আসবে এজন্য আপনি একদিন লাশ ফ্রিজিং করে রেখে দিবেন, এ বিষয়ে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। সুন্নাহ হচ্ছে একজন মানুষ মারা গেলে যত তারাতাড়ি সম্ভব দাফন করতে হবে। 

২) আপনার আমার এলাকায় একজন মানুষ মারা গেলে মাইকিং করা হয়ে থাকে। অনেকেই মাইক ভাড়া করে সারা দিন ব্যাপি মানুষ কে জানান দিয়ে থাকেন। সেটা হয়তো আপনি মানুষকে জানানোর জন্য করতে পারেন ।এক্ষেত্রে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে মৃতুর সংবাদ মানুষ কে জানানো অসুন্দর । কেননা মসজিদের মাইক শুধু মাত্র আজানের জন্য নিধারিত শোক সংবাদ আপনি চাইলে মানুষ কে দিতে পারেন । কিন্তু সেটা এত সময় নেওয়া যাবেনা যে আপনি সারাদিন মাইকিং করে বেড়াবেন কারন এটা শরীয়ত সম্মত নয় ।

৩) চিৎকার করে কান্না করা , চুল ছেড়া , আঘাত করা , মাটিতে থাপড়ানো এগুলো জায়েজ না । এ সমস্ত কাজ হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ । আপনার আত্মীয়-স্বজন মারা গেলে আপনার কান্না আসবেই এটাই স্বাভাবিক তাই বলে কান্নার নামে আপনি যা ইচ্ছা তাই করবেন এটা ইসলামে শরীয়ত সম্মত নয় । আপনার বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী আত্মীয় স্বজন মারা গেলে আপনার কান্নাটা হতে হবে শালীনতার সাথে ।

৪) আমাদের মধ্যে এমন লোক আছেন যারা মানুষ মারা গেলে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে টাকার বিনিময়ে নিয়ে এসে লাশের পাশে কুরআন খতম করে থাকেন এই ধরনের আমল আল্লাহর রাসুলের সুন্নাহ সম্মত নয়। লাশের পাশে সুরা ইয়াসিন তিলাওয়াতের কিছু হাদিস পাওয়া যায়। কিন্তু লাশের পাশে মাদ্রাসার ছেলেদেরকে নিয়ে এসে কুরআন খতম করার কোন নিয়ম নেই। হ্যাঁ মাদ্রাসার ছেলেরা কুরআন তিলাওয়াত করলে কুরআন কে খাটো করা হয়েছে এমনটা বলা যাবে না। মনে রাখতে হবে যে কোন আমল করার আগে সেই আমলটি সুন্নত সম্পুর্ন  কি না। অর্থাৎ সুরা ইয়াসিন যদি আপনি পরেন সেক্ষেত্রে আপনার উচিত কাউকে না ধরে এনে কুরআন খুলে নিজেই বসে পড়তে শুরু করা। 

৫) আরেকটি গুজব আমাদের সমাজে দেখা যায় সেটি হলো মৃত্যু ব্যক্তি তার জীবনে নামাজ পড়তেন না তাই বলে তার আত্মীয় স্বজন এর কাছ থেকে বিভিন্ন চাল ডাল আহরণ করে গরীব মিসকিন কে দেওয়া হয়। এটিও ইসলাম সমথর্ন করেনা এবং কোন কুরআন হাদিস থেকেও পাওয়া যাইনি।  সুতরাং এটি হচ্ছে একান্তই একটি গুজব। যিনি নামাজ পড়েননি তাকে আল্লাহর আদালতে অবশ্যই বিচার হবে। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url